ঢাকা , মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪ , ১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

​প্রশাসনের ভুলে শিক্ষাজীবন নিয়ে অনিশ্চিয়তায় ২২ শিক্ষার্থী

স্টাফ রিপোর্টার
আপলোড সময় : ২১-১১-২০২৪ ০২:৫৫:৪১ অপরাহ্ন
আপডেট সময় : ২১-১১-২০২৪ ০২:৫৮:২৮ অপরাহ্ন
​প্রশাসনের ভুলে শিক্ষাজীবন নিয়ে অনিশ্চিয়তায় ২২ শিক্ষার্থী ​সংবাদচিত্র : সংগৃহীত
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ভুলে ভর্তি জটিলতায় বিপাকে পড়েছে গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বশেমুরবিপ্রবি) ২২ শিক্ষার্থী। এসব শিক্ষার্থীদের ভর্তি করেও বাতিল দেখানোয় দুশ্চিন্তা ও হতাশায় পড়েছেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা। তবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলছে, টেকনিক্যাল কারণে তাদের ভর্তিতে সমস্যা হয়েছে। এ বিষয়ে গঠন করা হয়েছে তিন সদস্যের কমিটি। 
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের সূত্রে জানা গেছে, দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভর্তি বাতিল করে পছন্দের বিষয় পেয়ে গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য আবেদন করেন ২২ শিক্ষার্থী। বিভিন্ন কোটায় ভর্তির জন্য নির্বাচিত এ ২২ শিক্ষার্থী রীতিমত বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। ভর্তির পর অরিয়েন্টেশন ক্লাস ছাড়াও কেউ কেউ দুই-তিন দিন ক্লাসও করেছিলেন। অথচ এরপর একটি ব্যক্তিগত নম্বর থেকে ২২ শিক্ষার্থীদেরকে জানানো হয় টেকনিক্যাল সমস্যায় তাদের ভর্তি বাতিল করা হয়েছে। এমন খবরে মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে তাঁদের। অনেক শিক্ষার্থীর এটি দ্বিতীয় বছর। এবার ভর্তি হতে না পারলে তাদের শিক্ষাজীবন শেষ হয়ে যাবে। এতে এসব শিক্ষার্থী হতাশায় পড়েছেন।
এদিকে ভর্তি বাতিলের খবরে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে ছুটে আসেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা। কিন্তু এ বিষয়ে তাঁরা কোনো সদুত্তর পাননি। তাদেরকে শুধু জানানো হয়েছে, টেকনিক্যাল সমস্যার কারণে এমনটা হয়েছে। আমাদের শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়ে গেছে। যে কারণে এসব শিক্ষার্থীর টাকা-পয়সা ও কাগজপত্র ফেরত নিতে বলা হয়েছে। এ ঘটনায় অভিভাবকেরা বলছেন, এ বছর ভর্তি হতে না পারলে সন্তানদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। 
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ইকরা আক্তার ও সাবিদুন নাহার বলেন, ভর্তির পর অরিয়েন্টেশন ক্লাস ছাড়াও দু-তিনদিন ক্লাস করেছি। অথচ এরপর একটি ব্যক্তিগত নম্বর থেকে আমাদের জানানো হয় টেকনিক্যাল সমস্যার কারণে ভর্তি বাতিল করা হয়েছে। এটা শুনে মাথায় বাজ ভেঙে পড়ে আমাদের। এটি দ্বিতীয় বছর, এবার ভর্তি হতে না পারলে আমাদের শিক্ষাজীবন নষ্ট হয়ে যাবে।
অপর ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী সাজনান আনার চৌধুরী বলেন, খবর শুনে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে ছুটে আসি। কিন্তু তারাও কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। ছাত্র-অভিভাবকদেরকে শুধু বলেছেন, তাদের টেকনিক্যাল সমস্যার কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ে যে কয়জন শিক্ষার্থী ভর্তি করার কথা তা করা হয়ে গেছে। যে কারণে তাদের ভর্তি বাতিল করা হয়েছে এবং তাদের দেওয়া টাকা-পয়সা ও কাগজপত্র ফেরত নিতে বলা হয়েছে। এখন আমাদের অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ নেই। তাহলে কি আমাদের শিক্ষা জীবন নষ্ট হয়ে যাবে।
অপর ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর অভিভাবক তাইরিন ইসলাম বলেন, আমার মেয়ে ইংরেজিতে চান্স পেয়েছে জেনে বশেমুরবিপ্রবিতে ভর্তি হয়েছে। এখন বলেছে টেকনিক্যাল সমস্যার কারণে ভর্তি করা যাচ্ছে না। এই টেকনিক্যাল সমস্যা তো আমাদের নয়। এরপর আমরা দেখা করতে চাইলেও তারা দেখা করতে চায়নি। আমাদের দাবি আমাদের সন্তানদের ভর্তি করে নেয়া হোক।
ভুক্তভোগী এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক মো. বাবর আলী মল্লিক বলেন, ভর্তি হয়ে গেছে শুনে এদের মাইন্ড সেটআপ হয়ে গেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছে এখন ক্লাস হবে এটাই তারা জানে। কিন্তু এদের জানানো হয় ভর্তি বাতিল। এটা এসব শিক্ষার্থীদের লাইফ রিস্ক। সমস্যা তো শিক্ষার্থী বা অভিভাবকদের নয়, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের। এখন তারা কি করবে সেটা তাদের বিষয়। আমি চাই আমার সন্তান এখানে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে।
এ বিষয়ে ভর্তি কমিটির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. শাহজাহান বলেন, টেকনিক্যাল সমস্যার কারণে তাদের ভর্তি বাতিল করা হয়েছে। তবে এ ঘটনায় তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করেছে। সেখান থেকে কি সুপারিশ আসে, তার ওপর ভিত্তি করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলা স্কুপ/ প্রতিনিধি/ এনআইএন/ এসকে
প্রিন্ট করুন
কমেন্ট বক্স

এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ